থ্যালাসেমিয়া পরিক্ষা শিবির ২০১৮

থ্যালাসেমিয়া পরিক্ষা শিবির ২০১৮
ঐকতান সংঘ

থ‍্যালাসেমিয়া মুক্ত দেশ গড়তে আমাদের পরের প্রজন্ম কে সুস্থ রাখতে সপ্তর্ষি বিবেকানন্দ সোসাইটির ব‍্যবস্তাপনায় ঐক‍্যতান সংঘের এ বছরের নতুন প্রয়াস একদম বিনামূল্যে থলাসেমিয়া পরিক্ষা শিবির।
আগামী ৭ই নভেম্বর ২০১৮ বুধবার সকাল ১১টায় আমাদের থ‍্যালাসেমিয়া পরিক্ষা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।।
 আসুন জেনে নেই কী এই থ‍্যালাসেমিয়া পরিক্ষা, কী ভাবে হয় এবং কবে হবে এই পরিক্ষা ...
  • থ্যালাসেমিয়া রোগটি কি এবং কেন হয়?

থ্যালাসেমিয়া আসলে রক্তের একটি রোগ যা সাধারনত বংশগতভাবে ছড়ায়। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর রক্তে হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতি কম থাকে এবং আক্রান্তের শরীরের রোগ প্রতিরধ ক্ষমতা কমে যায়। মৃদু এবং তীব্র- এই দুইরকমের থ্যালাসেমিয়া হতে পারে। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে এই রোগ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় ১ লক্ষ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।

  • থ্যালাসেমিয়া হবার কারন

আগেই বলা হয়েছে থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ। সাধারনত জিনে কম হিমোগ্লোবিন থাকার কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়। বাবা এবং মা উভয়ের অথবা বাবা অথবা মা যেকোনো একজনের থ্যালাসেমিয়া থাকলে, এটি সন্তানের মধ্যে ছড়াতে পারে।

  • থ্যালাসেমিয়া কাদের আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে?

বাবা এবং মা যেকোনো একজনের অথবা বাবা মা উভয়েরই থ্যালাসেমিয়া থাকলে তাদের সন্তানের মধ্যেও এই রোগ দেখা দিতে পারে। আবার কিছু কিছু অঞ্চলে এ রোগ বেশি দেখা যায়। যেমন- দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ইটালি, গ্রীস ইত্যাদি।

  • থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা

মাইনর থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসার কোন প্রয়োজন হয় না। কিন্তু মেজর থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে, নিয়মিত রক্ত গ্রহন (প্রয়োজনবোধে বছরে ৮ থেকে ১০ বার) করতে হয়। বার বার রক্ত নেওয়ার ফলে বিভিন্ন অঙ্গে অতিরিক্ত লৌহ জমে যেতে পারে এবং এর ফলে যকৃত বিকল হয়ে যেতে পারে। তাই, এরকম ক্ষেত্রে জটিলতা এড়াতে আয়রন চিলেশন থেরাপীর সাহায্যে অতিরিক্ত লৌহ বের করে দেওয়া হয়।
অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া রোগ হতে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে একজন ম্যাচ ডোনার লাগবে। আমাদের দেশে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা না থাকায়, এই অপারেশন দেশের বাইরে গিয়ে করতে হয়। এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রণ এবং ফলিক এসিড সেবন করতে হতে পারে। আবার জীবনযাপন পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন- চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত কোন ঔষধ বা ভিটামিন সেবন না করা, সুষম ও পুষ্টিকর খাবার বিশেষ করে ক্যালসিয়াম, জিংক, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে ইত্যাদি।

  • রোগ নির্ণয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা

রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা, লোহিত রক্ত কণিকার আকারের পরিবর্তন, বিবর্ণ লোহিত রক্ত কণিকা, লোহিত রক্ত কণিকায় হিমোগ্লোবিনের অসম থাকা, শিশুর রক্তে আয়রণ ও লৌহের পরিমাণ, হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ইত্যাদি জানা যায়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর থ্যালাসেমিয়া আছে কিনা অথবা রোগী ত্রটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন জিন বহন করছে কিনা তা নির্ণয় করা যায়। গর্ভস্থ সন্তানের থ্যালাসেমিয়া আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কোরিওনিক ভিলিয়াস স্যাম্পলিং, এ্যামনিওসেনটিসিস, ফিটাল ব্লাড স্যাম্পলিং ইত্যাদি পরীক্ষা করা যেতে পারে। থ্যালাসেমিয়া আছে বা হতে পারে এরূপ সন্দেহ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতে হবে।
আমি সপ্তর্ষি
 আমি সপ্তর্ষি । ছিলাম আনন্দের পৃথিবীতে । খেলেছি ক্রিকেট,দাবা,ব্রিজ,ব্যাটমিন্টন আরও কত কী। মেতেছি পূজোর আয়োজনে,বনভোজনে,নাটক অভিনয়ে, কম্পিউটার কি-বোর্ডে। তুলেছি ফটো। ডুব দিয়েছি পুকুরের এপার-ওপার। লুকিয়ে চালিয়েছি মোটরবাইক,শীতের ভোরে মা-বাবাকে তুলেছি চা বানিয়ে। আদরের বোন সাএনিকে দিয়েছি জন্মদিনের উপহার,পর দুঃখে কাতর হয়েছি,বাবায় দিয়েছে প্রেরনা। আমি কবিতা লিখেছি। গিটারে দিয়েছি টান। মাধ্যমিকের শেষ বেলায় -"মুক্তির মন্দির সোপান তলে কত প্রান হল বলিদান...।" কিন্তু পরের দিনই সব ছেড়ে বাধ্য হয়েছি বিদায় নিতে। কেন জানো? আমার মা বাবা জানতো না ওরা দুজনেই থ্যালাসেমিয়া বাহক। ৪ঠা জুন,১৯৮৬ আমার জন্ম। তখন জনমানসে থ্যালাসেমিয়া শব্দটি ছিল খুবই অপরিচিত ।মা বাবা দুজনেই বাহক-তাই আমি মারনরোগ থ্যালাসেমিয়ার শিকার। দুজনের যে কেউ একজন বাহক হলে আমি বড় জোর হতাম অমিতাভ বচ্চন বা ফ্রান্সের জিদানের মত একজন বাহক মাত্র,সব ছেড়ে আমায় চলে আসতে হত না। ক্ষত বিক্ষত হৃদয় বিদির্ণ মা বাবা থেকে আমাদের বিদায় নিতেই হয়,লক্ষলক্ষ টাকাকেও আমাদের ধরে রাখা যায় না। আর্থিক পঙ্গু হতে হয় সব পরিবারকে।
গোপন কথাটি বলি- আমি কিন্তু থ‍্যালাসেমিয়া নিয়ে জম্মেছিলাম এ বিশ্বকে থ‍্যালাসেমিয়া মুক্ত করতে। মা বাবা বুঝেছে এ কথা, তাই বিবাহ যন্ত্রণায় গর্বিত আমায় নিয়ে।

সপ্তর্ষি থ‍্যালাসেমিয়া প্রতিরোধের প্রতীক।
মাত্র দুটি কথা বলি -
 (১) তুমি থ‍্যালাসেমিয়া বাহক কী না পরিক্ষা কর।
(২) যদি বাহক হও, অন‍্য কোনো বাহকে বিবাহ করো না এভাবে এ বিশ্ব থ‍্যালাসেমিয়া মুক্ত হবে একদিন। আবার বলি একমাত্র এভাবেই এ বিশ্ব  থ‍্যালাসেমিয়া মুক্ত হবে একদিন কথা দুটি বোঝাতে চলবে অভিযান। 
বাহক নির্ণয় চলছে সামিল হও তোমারাও।


কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য:
শিবিরের তারিখ ও সময় : ৭ই নভেম্বর ২০১৮ বুধবার, সকাল ১১টায়
• পথ র্নিদেশ : চণ্ডীপূর থেকে নন্দীগ্ৰামগামী বাসে হরিপুর বাসস্টপে নেমে দক্ষিন দিকে ৫ মিনিটের হাটাপথ বট-অশ্বস্থ মোড় 
• যোগাযোগ : 8967014916, 9679588579
• WhatsApp No : 7074772769

আপনি এই থ‍্যালাসেমিয়া পরীক্ষায় আগ্রহী হলে এখুনি নাম নথিভুক্ত করুন, নাম নথিভুক্ত করতে Register Now তে ক্লিক করুন ।।
পরীক্ষাটি সম্পূর্ণ বীনা মূল্যে
ছাত্র ছাত্রীদের কল‍্যানার্থে সমস্ত অভিভাবক- অভিভাবিকাদের আন্তরিক  সহযোগিতা একান্ত কাম্য।


No comments:

Post a Comment

Follow us @aikyatansangha